রোমান্টিক ছাত্রী যখন বউ শেষ পর্ব
মাথা থেকে আজাইরা চিন্তা ঝেরে ফেলে পড়ায় মনযোগ দাও( রাব্বি)
.
-- জ্বী স্যার।
.
তারপর রাব্বি প্রাইবেট পড়ানো শেষ করে বাসায় যায়, খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে।
.
পরের দিন সকালে ভার্সিতে যায়।
ভার্সিটি থেকে আসার সময় রাব্বির এক মেয়ে বন্ধুর সাথে হেটে কথা বলে যাচ্ছিলো
তখনি সামনে পরে মীম। মীমও কিছু না বলে বাসায় চলে যায়।
রাব্বিও বাসায় চলে আসে।
.
রাতে রাব্বি যায় মীমদের বাসায় পড়াতে।
.
পড়ানোর সময় মীম প্রয়োজন ছাড়া তেমন কিছু কথা বলেনি।
.
পড়ানো শেষের দিকে তখন মীম বলল।
.
-- কালকে সকালে আমার সাথে একটু দেখা করবেন স্যার.??
.
-- কেন?
.
-- কাজ আছে কালকে সকালে ৭ টার সময় লেকের পারে আসবেন।
.
-- কেন বলবে তো?তা ও আবার এত সকালে?
.
-- আসলেই বুঝতে পারবেন।
.
-- আচ্ছা দেখি চেষ্টা করবো।
.
-- চেষ্টা না আসতেই হবে।
.
তারপর রাব্বি চলে যায়।
.
পরের দিন সকাল ৭ টার সময় রাব্বি ঘুম থেকে উঠে। ফ্রেশ হয়ে।নিজের রুমে আসার পর মনে পরলো মীম বলেছিলো লেকের পারে যেতে।
.
তারপর রাব্বি লেকের পাড়ের উদ্দেশ্যে বের হয় বাসা থেকে।
সকাল বেলা পরিবেশটা ভালোই লাগছে। তাই হেটেই গেল রাব্বি।
.
হালকা কুয়াশা। শীত এখনো আসে নি তবে হাকলা কুয়াশা পড়ে।
.
রাব্বি পরিবেশটা উপভোগ করছে।
.
তারপর লেকের পাড়ে গিয়ে দেখে মীম দারিয়ে আছে। স্কুল ড্রেস পড়া।
.
রাব্বি যাওয়া পর পরই মীম বলল।
.
-- কয়টা বাজে দেখেছেন।
.
-- ৭ :২৩ বাজে।
.
-- তাহলে ২৩ মিনিট লেইট কেন করেছেন?
.
-- ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে। আর বলো কিসের জন্য ডেকেছো।
.
-- আপনাকে আমার ভালো লাগে। I love you
.
-- হা হা হা। পিচ্ছি বলে কি।
.
-- হাসবেন না। সত্যি বলছি।
.
-- এইসব মাথা থেকে ফেলে মন দিয়ে পড়াশুনা করো।
.
-- আমি যে টা বলছি সেটার উত্তর দেন? ।
.
-- তুমার সাথে কী আমার প্রেমের সম্পর্ক? তুমি আমার ছাত্রী।
.
-- আমি এত কিছু বুঝিনা। আমি আপনাকে ভালোবাসি।
.
-- এটা হয়না মীম কেন বুঝনা।
.
-- আপনি চাইলেই হয়।
.
-- আমি চাই না।
.
-- তাহলে আমি আর পড়াশুনা করবো না। এখানে আজ থেকেই সমাপ্ত।
.
-- পাগল নাকি।
.
-- হ্যা পাগলই।
.
রাব্বি কি বলবে বুঝতে পারতেছে না। তখনি মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো।
.
-- হ্যা রাজি হতে পারি একটা শর্তে (রাব্বি)
.
-- কী শর্ত।
.
-- এস এস সি পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেতে হবে।
.
মীমের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো।
.
-- এটা বাদে অন্য কিছু বলেন।
.
-- নাহ হবে না। গোল্ডেন A+ না পেলে কিছু করার নাই।
.
মীম একটু ভেবে বললো।
.
-- আচ্ছা ঠিক আছে।
.
-- আর হ্যা আমি আর তুমাকে পড়াবো না।
.
-- কেন।
.
-- এমনি।
.
-- ওকে পড়াতে হবে না।
.
তারপর মীম চলে গেল। মীম মনে মনে চেলেন্স নিল যে যেভাবেই হোক সে গোল্ডেন A+ পাবে।
.
তারপর থেকে মীম দিনরাত পড়াশুনা করতে থাকে।
..
...
.....
দেখতে দেখতে মীমের এসএসসি পরীক্ষা চলে আসে।
.
এর মধ্যে রাব্বির সাথে দেখা হলেও তেমন কোনো কথা বলতে পারতো না।
.
এরমধ্যে পরিক্ষা শেষ হয়ে যায়।
.
মীম অনেক খুশি কারণ সে ভালো পরীক্ষা দিয়েছে।
.
ঘুরেবেড়িয়ে দিন কাটতে থাকে মীমের দেখতে দেখতে রেজাল্টের দিন চলে আসে।
.
আজকে মীমের রেজাল্ট দিবে।
.
সকাল থেকে মীম তার রুমে বসে আছে।
মীমের মনে চিন্তার শেষ নেই। গোল্ডেন A+ না পেলে সে রাব্বি কে হারাবে।
.
তখনি মীমের বাবা এসে বলল।
.
-- মীম মা দরজা খুল।
.
-- না খুলবো না। আগে বলো রেজাল্ট কি হয়েছে।
.
-- বলবো আগে দরজা খুল।
.
মীম দরজা খুলার পর মীমের আব্বু মুখটা গুমরা করে রাখে।
.
-- কী হয়েছে আব্বু বলো।
.
-- তুই....
.
-- আমি কি পেয়েছি?
.
-- তুমই গেল্ডেন A+ পেয়েছিস।
.
মিম খুশিতে চিল্লান দিয়ে উঠে।
.
তারপর মীম তার আম্মু কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে রাব্বিকে কল করে।
.
-- হ্যালো(রাব্বি)
.
-- এখনি লেকের পাড়ে আসেন।
.
-- কেন পরে আসবো।
.
-- নাহ আমি কিছু জানি না।এখনই আসতে হবে।
.
-- ওকে বিকেলে আসবো।
.
-- হুম ৪ টায় আসবেন।
.
-- ওকে।
.
তারপর বিকাল ৪ টার সময় রাব্বি লেকের পারে যায়
গিয়ে দেখে কেউ নেই।
.
তারপর একটু দারায়। তখন রাব্বি অনুভব করে কেউ পেছন থেকে তাকে জরিয়ে ধরেছে।
.
রাব্বি ছারিয়ে দেখে মীম।
.
-- এখন তো আর কোনো বাধা নেই। আমি গোল্ডেন A+ পেয়েছি। এখন আপনি আমাকে ভালোবাসতে হবে।(মীম)
.
-- এসো এখানে।
.
তারপর মীম আর রাব্বি লেকের পাড়ে বসে।
.
-- তুমি তো মাত্র এসএসসি পাশ করেছো। সামনে আরো কত জীবন পরে আছে। তুমি গোল্ডেন A+ পেয়েছো আমি অনেক খুশি হয়েছি। কিন্তু আমি যে তুমাকে সেই দিন শর্ত দিয়েছিলাম সেটা আমি পরিস্থিতে পরে দিয়েছিলাম।কারণ আমি যদি তখন তুমাকে না করে দিতাম তাহলে তুমার লেখাপড়ার ক্ষতি হতো।তাই আমি বাধ্য হয়ে তুমাকে শর্ত দিয়েছি। আমি তুমাকে ভালোবাসতে পারবো না। আমি যানি এটা তোমার আবেগ। (রাব্বি কথা গুলো বললো একনাগাড়ে)
.
-- কী বলছেল। প্লিজ আমার সাথে এমন করবেন না আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি (মীম কান্না করে বলল)
.
-- আমি আসি ভালো থেক আর কোন পাগলামি করো না।
.
তারপর রাব্বি চলে যায়। মীম বসে কান্না করছে।
মীমের কান্না থামছে না।।
.
তারপর মীম বাসায় গিয়ে দরজা বন্ধকরে কান্না করতে থাকে।
.
মীমের বাবা মা জিজ্ঞেস করছে কেন কান্না করছে কি চায় সে। কিন্তু মীম বলে নি।
.
২ দিন কান্না করার পর হঠাৎ করেই মীম অজ্ঞান হয়ে যায়।
তার বাবা মা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়।
.
ডাক্তার বলে শরীর দুর্বলতা কারনে এমন হয়েছে মীম ২ দিন ধরে কিছুই খানি তাই।
.
ডাক্তার চিকিৎসা করার পর মীমের জ্ঞান ফিরেছে।
.
-- মা বল তোর কি চাই। কেন এমন করতেছিস?(মীমের আব্বু)
.
-- আমার কিছু চাই না। আমি কালকেই নানুর বাসায় চলে যাবো। ঐখানে থেকেই কলেজে পড়বো।
.
-- আচ্ছা পড়িস।
.
সেদিন হসপিটাল থেকে বাসায় গিয়ে মীম পরের দিন আর নানুর বাড়িতে চলে যায়।
.
এদিকে রাব্বি কয়েকদিন মীমকে দেখতে পায়নি।
রাব্বি শুয়ে আছে আর মীমের কান্নাময় মুখটা ভেসে উঠছে।
রাব্বিরও খারাপ লাগছে।
.
তারপর রাতের খাবার খেতে যায় রাব্বি সেখানেও মীমের চেহেরাটা ভেসে উঠতেছে।কোনোরকম খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে পড়তে বসে। বই মেলতেই বইতে মীমের ছবি ভেসে উঠে। রাব্বি বুঝতে পারছে না কী হচ্ছে।
.
তারপর রাব্বি শুয়ে পরে। চোখ বন্ধ করতেই মীমকে দেখতে পায়।
.
.
এমই হচ্ছে কিছুদিন।
.
রাব্বি বুঝতে পারে সে মীমকে ভালোবেসে ফেলেছে।
.
পরের দিন থেকে রাব্বি আর দেখতে পায় না মীমকে।
.
.
রাব্বি খোজ নিয়ে জানতে পারে মীম তার নানুর বাসায় চলে গিয়েছে।
.
.
.
.
হ্যা তারপর ২ বছর চলে গেল রাব্বি মীমকে দেখতে পায় না কিন্তু ভালোবাসাটা রয়ে গেছে।
এর মধ্যে মীম একবারের জন্যও বাসায় আসেনি। তার আব্বু আম্মকে দেখতে ইচ্ছে হলে তাদের কল দিয়ে সেখানে নিতো।
.
.
রাব্বি সময় পেলেই সেই লেকের পাড়ে গিয়ে বসে থাকে। রাব্বি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পরতেছে। রাব্বি মীমের বাসার সামনে দিয়ে গেলেই তাকিয়ে থাকে বারান্দায় দেখতে পায়নি একটি বার।
.
মীম এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আজ সে বাসায় এসেছে ২ বছর পর। সবকিছুই আগের মতই চলতেছে।মীম বাসার বারান্দায় দারিয়ে আছে। রাব্বি সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো আগের মতই বারান্দায় তাকিয়ে চোখ আটকে যায়। দেখে মীম দারিয়ে আছে। মীম আগের থেকে অনেক বড় হয়েছে। দেখতেও সুন্দর যে কেউ পছন্দ করবে। রাব্বি এক ধেনে তাকিয়ে আছে।
.
মীম বুঝতে পেরে চলে যায়।
.
বিকেল বেলা মীম বাসা থেকে বের হয় একটু ঘুরতে। লেকের পাড়ে যাওয়ার পরই রাব্বি সেখানে যায়।
.
-- মীম শুনো একটু (রাব্বি)
.
-- আমার কাছে টাইম নেই আমি যাচ্ছি। (মীম)
.
-- একটু দারাও প্লিজ। কথাটাতো শুনো।
.
তারপর মীম চলে যায়।
.
পরের দিন আবার রাস্তায় মীমকে দেখতে পেয়ে রাব্বি তার কাছে যায়।
.
-- মীম প্লিজ শুনো আমার কথাটা।(রাব্বি)
.
-- ধুর আবার। আমাকে ডিস্টার্ব করবেন নাতো।
.
মীম চলে যাচ্ছিলো তখনি রাব্বি তার হাত টেনে ধরে।
.
পাশে কয়েকটি পুলিশ ছিলো।পুলিশ এসে বললো।
.
-- কি হচ্ছে এখানে ইভটিজিং?(পুলিশ)
.
-- নাহ স্যার। আমরা পরিচিত (রাব্বি)
.
পুলিশ তখন মীমকে জিজ্ঞেস করে।
.
-- আপনি কি একে চিনেন? আপনাকে কি উনি ডিস্টার্ব করছে?(পুলিশ)
.
মীম রাগের মাথায় বলে ফেলল,,,,,
.
-- হ্যা উনি আমাকে ডিস্টার্ব করছে।(মীম)
.
-- রাস্তাঘাটে মেয়েদের বিরক্ত করিস। দারা আজকে তুকে বুঝাবো।
.
তারপর রাব্বিকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।
.
তারপর তারনামে মামলা দিয়ে দেয় ইভটিজিং এর।
.
৩ বছরের জেল হয় রাব্বির।
.
আর এইদিকে মীমের রেজাল্ট দেয় ভালো রেজাল্ট করে।
.
মীম ভার্সিতে ভর্তি হয়।
দিন যাচ্ছে মীমের ভালোই। রাব্বিকে ভুলেই গিয়েছে।
,,
,,
হ্যা রাব্বির বাবা মা তাকে দেখতে ও যায়নি একবার। তাদের ছেলে এমন একটা কাজ করবে ভাবতেও পারেনি।
.
রাব্বির দিন যাচ্ছে এভাবেই জেলে বসে।
দিনরাত মশা, মাছি, ছারপোকার কামড় সহ্য করে।
.
তবুও রাব্বির কোনো কষ্ট নেই। এরপর মীম আর একবার খোজও নেয়নি রাব্বির।
মীম নতুন নতুন বন্ধু বান্ধব পেয়ে ভালোই দিন কাটাচ্ছে।
.
.
.
.
হ্যা আজকে ৩ বছর পর রাব্বি ছাড়া পেয়েছে। বাসার কেউ আসেনি তাকে দেখতে।
.
বাসায় যাওয়ার তার বাবামা তাকে অনেক অপমান করার পর,,,,,,
বাসা ছেড়ে চলে আসে,,,
.
তার কয়েকদিন পর রাব্বি এক্সিডেন্ট করে ট্রাকের সাথে মাথায় আঘাত পেয়ে আর কিছুই মনে করতে পারেনি রাব্বি।
.
.
.
মীম বাসায় আসে। ভালো লাগছিলো না তাই সেই লেকের পাড়ে যায়। এক যায়গায় গিয়ে বাসে মীম।
.
পাশে এক ছেলের চিল্লানি শুনে পাশে তাকায় মীম।
.
ছেলেটি বলছে।
.
-- ঐ পাগলের বাচ্ছা যাহ এখান থেকে।
.
মীম পাগলের দিকে তাকিয়ে থমকে যায়। পাগল আর কেউ নায় সে হলো রাব্বি।
.
বড় বড় চুল, ধারি। ছেরা পেন্ট আর ছেরা নোংরা একটা শার্ট পরা।
.
রাব্বির এমন অবস্থা দেখে মাথা ঘুরাচ্ছে মীমের।
.
তখনি কয়েকজন মানুষ এসে রাব্বিকে টেনে হিচরে নিয়ে যাচ্ছে তারা হলো। জোরাজোরির মাঝে রাব্বির ছেরা পেন্টের পকেট থেকে ছোট একটি চিরকুটের মত কাগজ মাটিতে পরে।
.
লোকগুলো নিয়ে যায় রাব্বিকে।
.
মীম কাগকটা হাতে নিয়ে দেখে চিরচেনা সেই হাতের কিছু লেখা।
মীম পড়তে থাকে লেখাগুলো।
""প্রিয় মীম,
কেমন আছো তুমি? কোথায় আছো তুমি?
এখনো কি আমার প্রতি অভিমান করে আছো। তুমাকে সে দিন আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম তুমার ভালোর জন্য। তুমি কান্না করেছিলে। তুমার কান্না ছিলো বেশি হলে ১ বছর। কিন্তু আমি কান্না করেছি ৫ টি বছর। হ্যা আমি ৩ বছর জেলে ছিলাম। বিশ্বাস করো আমার একটুও কষ্ট হয়নি।
তুমার কি মনে আছে? আমার সাথে একদিন রিকশায় উঠেছিলে। তুমি রোমান্টিক ভালে আরচোখে বারবার তাকাচ্ছিলে। আমি তুমার ভালোবাসাটা সময় মতো বুঝতে পারিনি।
হ্যা এখন তুমাকে আমি পাগলের মত ভালোবাসি। জেলের মধ্যে সেই মশা, মাছি আর ছারপোকার কামর গুলো আমার কাছে কিছুই মনে হয়নি। জানো আমি আজও চোখ বন্ধ করলে তুমার সেই পিচ্ছি চেহেরাটা ভেসে উঠে।
যানি না কখনো দেখা হবেকি না। ভালোথেকো সবসময়।
ইতি
ইভটিজার।
.
চিঠিটি পড়ে মীমের চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। মীমের হাওমাও করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু কান্না করতে পারছে না। বুক ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে। আমি আজও ভালোবাসি তুমাকে।
👉👉👉👉👉(সমাপ্ত)👈👈👈👈👈