জলপরী যখন আদুরে বউ পর্ব ২ - নিবর অনুভূতি

মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

জলপরী যখন আদুরে বউ পর্ব ২



শিশীর ওর মামার বাড়িতে এসে চুপি চুপি দরজা খুলে,, ঘরে ঢু*কে শুয়ে পরলো,,

তারপর এই মায়াবী রোদমিলার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো,,


দূদিন হলো গ্রামে আসছে,, ওর নানা নানী গত হয়েছে অনেক বছর আগে,,তাদের ক*বর টাও জিয়ারত করতে গেলো,, 


ছোট মামাতো খালাতো ভাই-বোনদের সংগে হৈ-হুল্লোড় আর মজা করেই দিন কা*টতে লাগলো,,


কিন্তু শিশীর শুধু রাত হওয়ার অপেক্ষায় থাকে,, 

রাত হলেই রোদমিলার সংগে দেখা করতে হবে,, 


আজ রাতেও সবাই ঘুমিয়ে পরলো,, 

শিশীর দরজা খুলে চুপি চুপি দিঘীর পারে গিয়ে,,  বসে বসে বাঁশি বাজাতে লাগলো,,

ওর বাসির সুরে এতটাই মুগ্ধ হলো পরীরা,, যে ওর বাশির সুর শোনার অপেক্ষায় রইলো সবাই

শিশীর বাশি বাজাচ্ছে,,  রোদমিলা আর ওর বান্ধবীরা আসছে,,

ওদের দেখে হাসান খুশি হলো,,


আজ রোদমিলা শিশীরের জন্য বিভিন্ন রকমের মিষ্টি জাতীয় খাবার আনলো,,

শিশীরের মুখে তুলে দিলো মিষ্টি গুলো,,

রোদমিলার বান্ধবীরা সবাই হাসতে লাগলো,,

শিশীর এত সুস্বাদু মিষ্টি এর আগে কোনদিন খায়নি,, আর এমন মিষ্টি ও কোনদিন দেখেওনি,,

তবে একটা মিষ্টি ও চিনতে পারলো,, এটা হলো তুরষ্কের বিখ্যাত মিষ্টি "তারকিস ডে-লাইট"

শিশির তো অবাক,, এই রকম গায়ের প্রতন্ত অঞ্চলে এমন মিষ্টি খুজে পাওয়া তো দূষ্কর নয় শুধু,, এরা এই মিষ্টির নাম শুনছে কি না,, সেটার সন্দেহ আছে,, 

আজ রোদমিলার কলসি ভরা মিষ্টি,,  

রোদমিলা শুধু কলসিতে হাত দেয়,, আর বিভিন্ন রকমের মিষ্টি বের করে,,শিশীর বললো আর ক্ষেতে পারবো না,,

রোদমিলা একটা কাপরের পুটলি করে বাকি মিষ্টি গুলো ওকে দিয়ে বললো,, বাড়িতে নিয়ে খাওয়ার জন্য,, 

তবে সাবধান কেউ জেনো না জানে এগুলো আমি দিয়েছি,,

শিশীর মাথা নারিয়ে হা বললো,,


আজ রোদমিলার বান্ধবীরা বললো দিঘীতে শিশীরকে গোসল করার জন্য,, 

শিশীর বললো এতরাত দিঘীতে গোসল করলে,, নির্ঘাত অসুস্থ হয়ে যাবে,, 

রোদমিলার বান্ধবীরা হেসে হেসে দিঘীর পানিতে ঝাপ দেওয়া শুরু করলো,,

শিশির ওদের সাহস দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইলো,, 

রোদমিলা বুঝলো হাসান ভয় পাচ্ছে,, তাই বললো,, তোমাকে পানিতে ঝাপ দিতে হবে না,, আমরা গোসল করা জন্যই আসি এখানে,,  গোসল করে চলে যাবো,,তারপর রোদমিলাও পানিতে ঝাপ দিলো,,


একঝাঁপ দিয়ে রোদমিলা পানির নিচে চলে গেলো,,

শিশীর চেয়ে রইলো রোদমিলা কখন উঠবে,, দেখবে,, 

কিন্তু প্রায় ৩ মিনিট হয়ে গেলো রোদমিলা আর ওর বান্ধবীদের পানিতে দেখা গেলো না,,

শিশীর ভয় পেয়ে গেলো,, মনে মনে ভাবলো,, পানির নিচে আবার কিছু হলো না তো,,


হঠাৎ ওরা সবাই পানিতে ভেসে উঠে,, শিশীর এবার স্বস্তির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,  আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম,,


ওরা হাসতে হাসতে বললো,, 

শহরের ছেলেরা এতো ভিতু হয়,, সেটা তো আগে জানতাম না,, 


শিশীর এবার লজ্জা পেলো,,  


রোদমিলা আর বাকিরা সবাই পানিতে হৈ-হুল্লোড় করতে লাগলো,,

কেউ কেউ শিশীরের জন্য পানির নিচ থেকে ঝিনুক কুরিয়ে আনতে লাগলো,

কেউ কেউ শিশীরের গায়ে পানি ছিটাতে লাগলো,,


রোদমিলা পানিতে সাতার কে*টে বহুদূর গিয়ে আবার ফিরে আসে,,

এত দ্রুত সাতার তো কোন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত সাতারু ও পারবে না,,

গায়ের মেয়ে বলে কথা,,


শিশীর বললো রোদমিলা এবার উপরে উঠে আসো,,জ্বর আসবে নয়তো,, ঠান্ডা ও লাগবে


রোদমিলা বললো কিছু হবে না,, তুমি আরেকটু অপেক্ষা করো,,


এদিকে রোদমিলা আর বাকি গুলোর পা গুলো মাছের লেজে পরিনত হয়ে গেছে,,

এখন যদি ওরা দিঘীর উপরে উঠতে যায়,, তাহলে শিশীরের কাছে ধরা পরে যাবে,, 

ওরা জলপরী এটাতো শিশীর জানেনা,,

শিশীর ওদের দুষ্টামি দেখে,, আনন্দ পেতে লাগলো,, 


রোদমিলার শরীর ঠিক হওয়ার পরে,, ও উপরে উঠলো,, বাকি জলপরী গুলো ওর পিছুনে উঠলো,,

শিশীর ওর ভেজা শরীর দেখে,, আরো বেশি মুগ্ধ হলো,, 

এতো সুন্দর রমনী দিন বেলা গোসল করলে,, ঠিকই কারো নজরে পরবে,, তাই রাতে গোসল করে এটাই ঠিক আছে,, মনে মনে বললো শিশীর,,,


রোদমিলা বললো ওমন করে চেয়ে কি দেখো? 

শিশীর বললো আমি জলপরী দেখতেছি,,

রোদমিলা ভয় পেয়ে গেলো,, ভাবলো তাহলে কি শিশীর জেনে ফেলেছে ও জলপরী,, 

কিছু বলার আগেই শিশীর বললো,, সত্যি তুমি এতো সুন্দরী,,  মনে হয় বাস্তবে কোন জলপরী আমি দেখতেছি,, হয়তো জলপরীও তোমার মতো এতো সুন্দরী হবে না,,


এবার রোদমিলা নিশ্চিত হলো,, শিশীর কিছুই বুঝে নি,,

ও বললো,,যাহ দুষ্ট,,  এভাবে কারো প্রশংসা করতে হয় না,,

আমার বুঝি লজ্জা করে না,,


শিশীর বললো ভেজা কাপরে কতক্ষন থাকবে,, এবার কাপর পাল্টে নাও,


রোদমিলা বললো,,  বাড়িতে গিয়ে কাপর পাল্টাবো


ফজরের আজানের সময় হয়ে গেছে,,

রোদমিলা বললো আজ চলি,, যেতে হবে,,

শিশীর বললো আরেকটু পরে যাও,, এখনি তো আসলে


বাকি পরীগুলো বললো,, আপনারা প্রেম ভালোবাসা আগামীকাল কইরেন,, এখন যাওয়ার সময় হইছে,, জলদি আসেন,,

শিশীর বললো,, সবাইকে বেধে বাড়িতে নিয়ে যাবো,,

ওরা হাসতে হাসতে বললো বেধে নেওয়ার কি দরকার,,  দাওয়াত দিলে তো এমনেই চলে যাবো,,

তারপর ওরা জোরে জোরে হাসতে লাগলো,,


রোদমিলা বললো চলি আজকে,, মিষ্টি গুলো খেয়ে নিও সময় করে,,


শিশীর ওদের চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো,,  

তারপর বাড়িতে এসে পরলো,, কিন্তু মিষ্টির পুটলিটা আনতে ভুলে গেলো,,


সকালে ঘুৃম ভাংলো শিশীরের ওর মামাতো ভাই পলকের চিল্লাচিল্লিতে,,

শিশীর বাহিরে এসে দেখে অনেক মানুষ বাড়িতে জমা হয়ে গেছে,,

পলক দিঘীর পারে গিয়েছিল সকালে হাটতে হাটতে,, গিয়ে দেখে একটা পুঁটলিতে মিষ্টি পরে আছে,,

এগুলো ওই জলপরীদের ফেলে যাওয়া মিষ্টি,, 

ওরা আবার ফিরে এসেছে,,  

সবাই মিষ্টি গুলো দেখতে ভীর জমিয়েছে,, 


শিশীর মনে মনে হাসলো,, আর ভাবলো রাতে মিষ্টি গুলো ফেলে আসা উচিৎ হয়নি,, 


তারপর গ্রামের মানুষের অন্ধবিশ্বাস দেখে হাসতে লাগলো,,

সবাই অনেক আগ্রহে মিষ্টি গুলো দেখতে থাকলো,, তবে কেউ মুখে দেওয়ার সাহস করলো না,,


শিশীর এসব নাটক দেখে,,ঘরে চলে গেলো,, আর মনে মনে ভাবলো,, রোদমিলা এই ঘটনা টা জানলে কতটা কষ্ট পাবে,  

আমাকে দিলো খাওয়ার জন্য,, আর আমি সেগুলো ফেলে আসলাম


আজ রাতে দিঘীর পারে গিয়ে শিশীর বাঁশি বাজাচ্ছে,, 

কিন্তু আজ রোদমিলা আসার কোন নাম নেই,, 


অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর,, শিশীর বুঝলো সেই মিষ্টির খবর হয়তো রোদমিলার কাছে গেছে,, তাই ও হয়তো অভিমান করেছে,,


ফজরের আজানের আগে,, শিশীরের মন খারাপ করে বাড়িতে এসে শুয়ে পরলো,,

সকালে শিশির আহমেদ হৃদয় এর শরীরে প্রচুর জ্বর আসলো,,

এমন হঠাৎ জ্বর আসার কারন বুঝলো না কেউ,, 


ঔষধ আনলো,, তাতেও কোন কাজ হলো না,,

ওর মামী বললো একটা ভালো কবিরাজ আনতে,, যদি কোন আলগা বাতাস লাগে,,তাইলে সাইরা যাইবো,,


ওর মামা জলদি করে একটা কবিরাজ আনলো,, 

কবিরাজ ওকে দেখে বললো,, ওর উপরে কোন কিছুর নজর পরেছে,, কিছু পানি পরা আর তেলপরা দিয়ে চলে গেলো,, 


বিকেলে একটু সুস্থ হলো,,

কিন্তু রোদমিলার সংগে দেখা না হওয়ায় ও খুব কষ্ট পেতে লাগলো,,


আজ রাতে শিশীর দিঘীর পারে গিয়ে, একাকী মন খারাপ করে দারিয়ে রইলো,,


এমন সময় পিছন থেকে রোদমিলা ওর কাধে হাত রাখলো,,