পিচ্চি বউয়ের রোমান্টিক অত্যাচার পর্ব ১
কলেজ থেকে বাসায় ফিরতেই লক্ষ্য করলাম। আম্মু তার হাতে একটা ছবি নিয়ে সেটা খুব যত্ন সহকারে দেখতেছে.. আজব তো! আমি যে বাসায় এসেছি সেটা নিয়ে উনার কোনো মাথাব্যাথাই নাই.. এক বস্তা রহস্য মাথাই লইয়া আম্মুর কাছে গিয়ে উনার হাতে থাকা অই ছবিটা দেখার চেষ্টা করলাম। উরিস সা*লা এইটা সত্যিই কোনো মেয়ে! নাকি দূর দেশের কোনো পরিটরি... আই ডাউট. ( আহারে আহারে আহারে.. কোথায় পাবো তাহারে... যে এই পরি টার সন্ধান দেবে আমারে। এই যে পাঠক সাহেবেরা আপনারা যদি কেউ আমাকে এই পরিটার সন্ধান দিতে পারেন তাইলে আপনাদেরকে এক গাট্টি আইতকিলিম খাওয়ামু)
যাউকগা সেসব কথা আমি মনে এক বদনা খুশী আর মুখে সেই লেবেলের হাসি বজায় রাইক্ষা আম্মু কে জিজ্ঞেস করলামঃ- আম্মু এই মেয়েটা কে গো ?
আম্মুঃ এটা আমার বান্দবির মেয়ে "ইসরা" ( হু হু..আমার পরির সন্ধান পাইয়া গেছি যান ভাগেন আপনাদের কে আর আইতকিলিম খাওয়ামু না হুম)
আমিঃ ওওয়াও... হাউ কিউত
আম্মুঃ হুম ভিষণ কিউট। ইসরার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আজকেই ওর বিয়ে। ( আম্মুর মুখে এই কথাটা শোনা মাত্রই বাংলা সিনেমার নায়কদের মতো আমার মনের ভেতরে সাগরের ঢেউএর লাহান শ শ আওয়াজ কইরা। দুঃখ বইয়া যাইতে লাগলো সা*লার এই প্রথম কোনো মাইয়া দেইক্ষা ক্রাশ খাইলাম। আর তার কিনা আজকেই বিয়া। দুঃখের ঠেলায় অক্করে কাইন্দালছি
ওওওওয়া... ওওওয়া.... ওওওয়া
আমিঃ বিব বিয়ে..কিন্তু আম্মু ইসরাতো দেখছি অনেক ছোট্ট
আম্মুঃ হুম। তার বর টাও তো ছোট্ট ( আম্মুর মুখে এই কথাটা শোনা মাত্রই..আমার মনটা মুহুর্তের মধ্যেই খুশিতে ডগমগ করতে লাগলো আসলে সত্যি কথা বলতে পিচ্চি ছেলে মেয়ের বিয়া দেখতে আমার প্রষুর ভাল্লাগে )
আমিঃ ওয়াও ইন্টারেস্টিং..
আম্মুঃ আরও ইন্টারেস্টিং কাহিনী হচ্ছে বিয়েটা তোর সাথেই হচ্ছে..
আমিঃ এএএয়ে আম্মুউউ আমি এখনও অনেক চুডু..আমি বিয়া করমু না...
আম্মুঃ কিন্তু বাবা তোকে যে বিয়েটা করতেই হবে.
আমিঃ দেখ আম্মু আমি সাফ সাফ বলে দিচ্ছি আমাকে জোর করে বিয়া করাই দিলে আমি বউ রাইক্ষা ভাগা দিমু...
আম্মুঃ তোর যা খুশি করিস টেবিলে খাবার দেওয়া আছে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে। আর আজ রাতেই তোর বিয়ে...
( কথাটা বলেই আম্মু উনার রুমে চলে গেলেন)
ধেৎ.... মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেছে..
ফ্রেশ না হয়েই নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম।
আধাঘন্টা পর......
আম্মুঃ (আমার রুমে এসে) কিরে এখনও শুয়ে আছিস কেন খাবি না....
আমিঃ না খামু না আমার ইচ্ছের যখন কোনো মুল্যই তোমাদের কাছে নাই..তাহলে এই জীবন রেখে কি লাভ। না খাইয়া ম*ইরা যামু
আম্মুঃ আচ্ছা তার মানে তুই বিয়ে করবি না...
আমিঃ.........
আম্মুঃ আচ্ছা..ঠিক আছে আমি তাহলে কনে পক্ষকে না বলে দিচ্ছি...
আমিঃ থাইংকিউ আম্মুউউউউ..
( কথাটা বলা মাত্রই আম্মু আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আমিও এক্কেবারে গুলুগুলু হয়ে বিছানায় বসে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম)
উফফফফ চিন্তা মুক্ত হইলাম
যাই ফ্রেশ হয়ে খাবার খাই গিয়ে খুব খিদে পেয়েছে...
যা সা*লা. আপনাদেরকে তো এখনও আমার পরিচয় টাই দেওয়া হয় নাই...
আমি আরিয়ান খান
ডাক নাম, "আরিয়ান" আর এবার অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র।
তারপর ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের রুমে এসে ফেসবুকিং করছিলাম এমন সময় আম্মুর চিল্লাচিল্লি তে.. তারাহুরো করে বাইরে গেলাম।
দেখি আম্মু ফ্রিজ হয়ে দাড়িয়ে আছে..
আমিঃ আম্মু কি হইছে?
আম্মুঃ তোর জন্য এসব হইছে
আমিঃ আ..আ আমার জন্য!
আম্মুঃ হ্যাঁ তোর জন্য তুই ইসরাকে বিয়ে করবি না বলেছিস বলে মেয়েটা ছুরি দিয়ে তার হাত কেটে ফেলছে। এখন ওকে মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছে আমি ওখানেই যাচ্ছি.. যা তুই এবার মনের সুখে লুংগি ডান্স কর গিয়ে...
( আম্মুর মুখে এ কথা টা পরপরই বুকের বামপাশটা কেমন যেনো অজানা অনুভূতিতে.. কাউয়ার লাহান কা কা কইরা উঠলো। মেয়েটা আমার জন্য হাত কেটে ফেলছে.. আমি কিনা তাকেই বিয়ে করতে অসিকৃতি জানাচ্ছি.. ছি আরিয়ান ছিহ তুই খুব বাজে খুউউব )
আমিঃ আম্মু আমিও তোমার সাথে যাবো
আম্মুঃ কেন তুমি ওখানে গিয়ে কি করবে..
আমিঃ ( গুলুগুলু হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি)
আম্মুঃ (নরম গলায়) আচ্ছা ঠিক আছে রেডি হও।
তারপর তারাতাড়ি রেডি হয়েই মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। প্রায় ২০-২৫ মিনিট পর আমরা মেডিকেলে পৌছালাম। আম্মু ইসরার আম্মুকে কল দিয়ে তাদের অবস্থান জেনে নিলেন৷
তারপর আমি আর আম্মু ইসরার কাছে গেলাম ইসরা হাতে মাত্র বেন্ডেজ করা হয়েছে
আম্মুঃ ( ইসরার কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে) মা এখন কেমন আছো?
ইসরাঃ জি আম্মু ভালো ( দেখছো নি কারবারটা আমার আম্মুকে আম্মু বলছে )
আম্মুঃ আচ্ছা মা তুমি আরিয়ান এর সাথে কথা বলো আমি আর তোমার আম্মু একটু বাইরে থেকে আসছি..।
আমিঃ আম্মু আমিও তোমার সাথে যাবো..
আম্মুঃ ( বস্তা বস্তা রাগ মাথায় লইয়া) তোর নেকামি বাসায় গিয়ে ছুটাইতেছি ( কথাটা বলেই আম্মু আর আমার শাশুড়ীমা থুক্কু হবু শাশুড়ীমা বাহিরে চলিয়া গেলেন। আর আমি বেক্কেলের মতো চুপচাপ হইয়া ইসরার পাশে বসিয়া রইছি )
ইসরাঃ কি বেপার কিছু বলছেন না যে..
আমিঃ আপনি হাত কেনো কাটছেন!
ইসরাঃ What! এই.. এটা কোনো কথা হলো..
আমিঃ ওয়াও.. রাগলে তো তোমাকে ভিষণ কিউট বাচ্চাদের মতো লাগে...
ইসরাঃ কিহ.. আমি বাচ্চা আপনি আমাকে বাচ্চা কইলেন
ওওওয়া.. ওওওয়া... ওওওয়া....
আমিঃ অলে বাবুলে কাদে না.. কাদে না..
ইসরাঃ ( গুলুগুলু হয়ে) আমি কাদলে আপনার কি আপনি তো আমাকে ভালোইবাসেন না..
আমিঃ কে বলছে বাসি না..না বাসলে কি আর তোমার কাছে ছুটে আসতাম।
ইসরাঃ তাহলে আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না কেন..
আমিঃ তা রাজি হয়ে গেলে কি আর বুঝতে পারতাম আমার পিচ্চি কিউটের ডিব্বা বউ টা আমাকে কত্তোগুলা ভালোবাসে...
আমার কথাটা শোনা মাত্রই ইসরা লজ্জায় লাল হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো...
এমন সময় আমার আর ইসরার আম্মুর আগমন ঘটিলো
আম্মুঃ কিরে হয়ছে তাহলে চল বাসায় চল..।
আমিঃ..........
আম্মুঃ কি বেপার! আয়..
আমিঃ আম্মু আমি ইসরাকে বিয়ে করবো..
( আমার মুখে এই কথাটা শোনার পর আম্মু কেমন ভাবে যেনো আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তারপর হু হুহু হা হুহু হেসে দিলো..)
ইসরার আম্মুঃ আলহামদুলিল্লাহ
তারপর সোজা কাজি অফিস...
বিয়ার কাজ সম্পন্ন করে. ইসরা থুক্কু বউ লইয়া বাসায় ফিরলাম....
রাত প্রায় ১২ টা.....
এমন সময়ে বাশর ঘরে ঢুকেই যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না...
.
.
.
#চলবে...........................???