পিচ্চি মামাতো বোন যখন রোমান্টিক বউ পর্ব ১
-এ কি করলি তুই??
-কেন মামি।
-ভিখারির বাচ্চা তুই জানিস না আজ আমার মেয়েটা এখানে
ফিরবে।ভালো করে ঘর মুছতে পারিস না??
-মামি আমার হাত ব্যাথা করছে তো।
-ভিখারির বাচ্চা তোর হাত ব্যাথা করছে তা দিয়ে আমি কি
করবো তাড়াতাড়ি কর না হলে এই লাঠি দিয়ে তোকে
পিটাবো।
-করছি করছি তবুও মেরো না প্লিজ অনেক তো
মারলে এতোক্ষনে এখন একটু তো মায়া করো।
-তোর মতো গরীবের উপর কখনো মায়া
আসবে না মারলাম কিন্তু।
তাই বলে লাটি দিয়ে একটা বারি দেয় পিঠে আর ইমরান
ব্যাথা পায় চোখ দিয়ে জ্বল পড়ে তবুও কাজ করতে
থাকে।
ততোক্ষনে পরিচয়টা দিয়ে দেই আমার নাম ইমরান।
ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি বাবা মা ছোট বেলায়
মারা যায় তাই মামা নিয়ে আসে মামা কাজে বেশি সময়
বাইরে থাকে তাই বাসায় কম আসে আর মামি খুব মারে
আরেকজন আছে আচে আমার মামাতো বোন
বড়টা একসাথে পরে বেরাতে গিয়েছে তাই
কয়েকদিন তাও একজন কষ্ট দিয়েছে কিন্তু ছোট টা
১০ এ পরে সে ভালো।
দুপুরে হঠাউ কেউ বাসায় এসে
-আম্মুুুউউউ(ব্যাগ নিচে রেখে)
-আমার মা এসেছে(মামি)
এরআগে ইমরান কাজ করে ঘরে গিয়ে একটু মাত্র গা
এলিয়ে দিয়েছে আর ঘুমিয়ে গিয়েছে।
-কেমন আছো আম্মু।
-ভালো তমা মা তুই কেমন আছিস??
-ভালো।উফ খুব ক্লান্ত লাগছেে আম্মু একটা চা
খেতে হবে।
-আচ্ছা তুই অপেক্ষা কর।
-ইমরান ইমরান ।
-হা মামি(দৌড়ে এসে)
-চা বানিয়ে আন তো।
-আচ্ছা আনছি।
ইমরান গিয়ে চা টা বানিয়ে নিয়ে আনে।
-ছি এটা চা না ঠান্ডা পানি (এক চুমুক দিয়ে)
-কেন গরম ই তো আছে।
-ওয়েট দেখাচ্ছি গরম নাকি ঠান্ডা।
তমা ইমরানের গায়ের উপরে চা টা ঢেলে দেয়
ইমরান মুখে হাত চেপে ধরে রুমে গিয়ে দরজা
আটকে কান্না করতে থাকে।এদিকে তমার
কোনো কিছুই হয়না তারা স্বাভাবিক ভাবেই থাকে।
-কি করো ভাইয়া??(দরজায় টোকা দিয়ে)
-শুয়ে আছি তন্নি ভেতরে আয়।(ছোট মামাতো
বোন)
-ভাইয়া শুয়ে আছো কেন??
-না এমনি।
তন্নি ইমরানের কাছে যেতেই ইমরান হাত টা লুকিয়ে
ফেলে।
-ভাইয়া কি লুকালে??
-কিছুনা।
-চুপপ দেখাও বলছি।
ইমরান তন্নির ধমক শুনে অবাক পিচ্চি মেয়ে বলে কি।
ইমরান হাতটা বের করে।
-একি কি হয়েছে হাতে??
-কিছুনা রান্না করতে গিয়ে পুরে গিয়েছে।(মিথ্যা
বলে)
-দেখে কাজ করতে পারো না তুমি কতোবার
বলবো একটু দেখে কাজ করবে তো।
তন্নি স্যাভলন নিয়ে আসে আর ইমরান এর হাতে
লাগাতে থাকে ইমরান খেয়াল করে তননির চোখে
জ্বল চোখের কোনায় চিকচিক করছে ইমরান
স্পষ্ট বুঝতে পারছে সেটা।
-ভাইয়া একটা কথা রাকবা??
-হুম বল।
-চলো একটু ছাদে যাই প্লিজ প্লিজ বৃষ্টি হচ্ছে।
-না একদম না।
-ঠিক আছে।(মন খারাপ করে)
-মন খারাপ কেন করিস আচ্ছা চল।
-সত্যি??(অনেক খুশি হয়ে)
-হুমম চল।
দুজন ছাদে যায় গিয়ে দেখে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে।
তন্নি ইমরানের হাত ধরে বৃষ্টিতে টেনে নিয়ে
গিয়ে ভিজতে থাকে।ইমরান দাড়িয়ে থাকে আর তন্নি
বাচ্চাদের মতো লাফিয়ে ভিজতে থাকে।ইমরানের
এই প্রথম তন্নি কে এতোটা খুশি হতে দেখা।
-মেয়েরা যে সামানো কিছুতেই এতো খুশি হয় তা
তন্নি কে না দেখলে বুঝতে পারতাম না তবে
ভালো লাগছে পিচ্চিটা অনেক খুশি।
-ভাইয়া তুমিও আসো(হাচি দিয়ে)
-এইরে তারাতারি নিচে চল জ্বর এসে যাবে নইলে
তোর খবর আছে।
-আচ্ছা চলো।
দুজন নিচে চলে যায় খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরেরদিন মামির চিল্লানিতে ইমরানের ঘুম ভেঙ্গে
যায়।
-মামি কি হয়েছে??
-একমাত্র তোর জন্য আমার তন্নির এতো জ্বর তুই
চোখের সামনে থেকে যা এতিম ছেলে এক্ষনি
নইলে খারাপ হবে কিন্তু।
ইমরান মন খারাপ করে চলে যায় আজ তার মা থাকলে
আর কেউ তাকে হয়তো এতিম বলতে পারতো না।
-ভাইয়া আসবো??
-হুমম আয়।
-একিরে তন্নি তুই জ্বর নিয়ে চলে আসলি কেন
তোকে মাইর দেওয়া উচিত।
-হু দিও তোমায় দেখতে ইচ্ছা করছিলো তুমি খুব
কষ্ট পাইছো তাই না??
- আরে না সহ্য হয়ে গিয়েছে।
-খাইছো??
-না।
-খাবার নিয়ে আসছি আসো খাবে।
-না থাক।
-খাবে বলছি খাবে।
-তুই খেয়েছিস??
-আগে তুমি খাবে তারপর আমি খাবো।
-আচ্ছা তাড়াতাড়ি কর কলেজে যেতে হবে।
-তন্নি আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আমিও দিচ্ছি আর আমি
শুধু ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি কেননা একটা
ছোট মেয়েকে এতোটা বোঝার ক্ষমতা
কিভাবে দিতে পারে।ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সময়
অল্প।
-এই তন্নি থাকরে।
-হুমম সাবধানে যেও আর কোনো মেয়ের
দিকে তাকিও না।
-ওকে পিচ্চি আপু তুই গিয়ে ঔষধ খেয়ে নে।
-হুমম।
তন্নিকে বায় জানিয়ে চলে গেলো ইমরান
কলেজে একটু লেট হয়েছে ক্লাসে ঢুকতেই,
-স্যার আসবো??
-হ্যা আসো আসো তোমার কথাই বলছিলাম তুমি
কিরকম তা।
ইমরান ভয় পেয়ে যায়।
-তো স্টুডেন্ট একটা কথা এই ইমরান এমন ছেলে
যে এবার আমাদের কলেজে ফ্রাস্ট হয়েছে।
কথা শুনে ইমরান একটু সস্তি বোধ করে সবাই
ইমরানের দিকে তাকিয়ে হাত তালি দেয়।ইমরান খেয়াল
করে তমা কলেজে কিন্তু সে মুখ ঘুরিয়ে
রেখেছে।
-ইমরান জায়গায় গিয়ে বসো।
-জ্বি স্যার।
ক্লাস পর ক্যাম্পাসে ইমরান বসে আছে একটা
ছেলে আসে যে ইমরানের বেস্ট ফ্রেন্ড
ইমরানের কাছে সব শেয়ার করে আর ইমরান ও তার
কাছে সব শেয়ার করে।
-কিরে হিরো কলেজে তো হিরো হয়ে গেলি।
-কেনো রে??
-টপ এ আছিস আর বলছিস কেন??
-হুমম।
-চল বাসায় যাই।
-আচ্ছা চল।
বাসায় আসার পর
-আম্মু আম্মু।
-কি হয়েছে মা।
-তুমি ওই শয়তান ছেলেকে আর কলেজে
যেতে দিবানা।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
-কে ইমরানকে কলেজে যেতে দিবে না??
(ভেতরে ঢুকে)
-একি আব্বু তুৃমি??
-হুম আমি আর তোরা কি প্লান করছিস।
-কই কিছু না তো।
-ইমরানকে কলেজে যেতে দিবি না তাই না যদি আমি
শুনি ইমরানের কলেজে যাওয়া মিস হয়েছে তাহলে
তোমাদের মা মেয়েকে দেখে নিবো।আর
ইমরান কোথায় ইমরান ইমরান ।
-জ্বি আমায় ডাকছেন(নিচে নেমে)
ইমরান তার মামাকে দেখে অবাক হয়ে জড়িয়ে
ধরে। দুজন গল্প করতে করতে রুমে চলে যায়
আর তমা এবং তার মা দাড়িয়ে জ্বলতে থাকে।
পরেরদিন সকালে তন্নি ইমরানকে ডাকতে যায়।গিয়ে
দেখে ইমরান শুয়ে আছে এখনো ওঠেনি।তন্নি
চুপ করে ইমরানের মাথার পাশে বসে ইমরানের
দিকে চেয়ে থাকে যাতে বুঝতে না পারে।তন্নির
ইচ্ছা করে আলতো করে ইমরানের কপালে
ভালোবাসার পরশ একে দিতে কিন্তু তন্নি দিতে
পারেনা যদি ইমরান জেগে যায় এই ভয়ে।তন্নি ইমরান
কে নিয়ে কল্পনার জগতে ভাসতে থাকে।
-কিরে তন্নি তুই এখানে(জেগে গিয়ে)
-চমকে ওঠে।
-না কিছুনা ভাইয়া।
বলে এক দৌড় দেয়।ইমরান হাবার মতো তাকিয়ে থাকে
আর ভাবে কি এমন হলো যে দৌড় দিলো।
কলেজে যাওয়ার পর
-ইমরান কোথায় ছিলি??(সাফিন)
-জ্যামে পড়েছিলামরে কেন??
-তোর নামে ষড়যন্ত্র চলছেরে।
-কে করছে??
-ওই মোয়েরা।
ইমরান পিছনে তাকিয়ে দেখে কয়েকটা মেয়ে
আর সাথে তমা দাড়িয়ে।ইমরান বুঝতে পারে নতুন ফন্দি
আটছে তারা।
যদিও ইমরানের যাওয়াটা ঠিক হবেনা কিন্তু যায় ইমরান
দেখতে যায় কি করছে।
-তোরা দেখ ভিখারি এসেছে।
-আমায় ভিখারি বলবেন না।
-তো কি ফকির বলবো নাকি এতিম বলবো??
-কেনরে দোস্ত একে তুই এগুলা বলছিস কেন??
(তিশা)
-ঠিকি বলছি ওর বাবা মা নেই এতিম আমার বাসায় থাকে।(তমা
পুরোটা বলেনা)।ওই শোন যা আমার জন্য ফুসকা
নিয়ে আয়।না হলে কি করবো বুঝতে পারছিস তো।
ইমরানের এখন কিছু করার থাকেনা তাই বাধ্য হয়ে ইমরান
যায় ফুসকা নিয়ে আসতে।
-তুই এগুলা ঠিক করছিস না তমা ওকে এতো কষ্ট দিস না
দেখতে এত্তো কিউট আর তুই ওকে এভাবে
কেন কষ্ট দিচ্ছিস??
-দিবোই একটা কারন আছে।
-কি কারন??
-সময় আসুক জানতে পারবি।
-এই নাও ফুসকা।
-টক ভালোনা তুই আনলি কিভাবে(একটা খেয়ে)
ঠাশশশশশশ করে ইমরানের গালে চড় মারে চড়টা
অনেক জোড়েই মারে ইমরানের ঠোঠের
কাছে কেটে যায়।
ইমরান চলে যায় তমা ডাক দিলে না শুনে ইমরান চলে
যায়।
-তমা তুই কি করলি সামান্য কারনে??
-ঠিক করছি ও আমার চোখের কাটা।
-পস্তাবিরে তুই।
-হুমম দেখা যাবে।চল ক্লাসে যাই।
ইমরান বাসায় এসে রুমে এসে চুপচাপ বসে থাকে।
-কি হয়েছে ভাইয়া??(ইমরানের রুমে এসে)
-কিছুনারে তন্নি।
-তাহলে মন খারাপ কেন আর তোমার ঠোঠ
কাটলো কিভাবে??
-কিছু না এমনি কাটছে।
-গালে চড় মারার দাগ ও দেখছি সত্যি বলো কে
মারছে।
-আরে না এমনি।
-তুমি সত্যি বলবে কি না(ইমরানের হাত তমা র মাথায়
রাখে)
-তমা মারছে।
-তুমি ওয়েট করো আমি আব্বুকে সব বলছি।
ইমরান ডাকে কিন্তু তার আগেই দৌড় দেয় তন্নি। ইমরান
পিছু পিছু যেতে যেতে দেখে তননি তার আব্বুর
কাছে বলে দিয়েছে।
-ইমরান তোকে ও মারলো আর তুই আমায় জানাসনি??
-না মানে মামা।
-চুপ দেখ ওর কি করি।
এর মধ্যে তমা চলো আসে আর ইমরানের মামা
গিয়ে তমার গালে ঠাশশশশশশশ করে একটা চড় মারে,