পিচ্চি মামাতো বোন যখন রোমান্টিক বউ পর্ব ২
এর মধ্যে তমা চলো আসে আর ইমরান এর মামা
গিয়ে তমার গালে ঠাশশশশশশশ করে একটা চড় মারে।
-বাবা তুমি আমায় মারলে??
-হা মারলাম তুই যে এমন করতে পারিস আমি কল্পনাও
করতে পারিনি।
.
-কেন কি করেছি আমি??
-তুই ইমরানকে মেরে কি করেছিস দেখ।
তমা ইমরানের দিকে তাকায় দেখতে পায় সত্যি
অনেক জোড়ে মারছে তবুও তমা নিজের কাছে
একটুও অনুতপ্ত না হয়ে রাগে সোজা রুমে চলে
যায়।
-ইমরান তুই শুধু আমায় বলবি ও তারপর আমি সব ঠিক
করবো।
তমা রুমে এসে রাগে ফুলতে থাকে।
-ইমরানের বাচ্চা তুই আমায় থাপ্পড় মারালি ঠিক আছে
এমন অবস্থা করবো তোর সারাজীবন আমার নাম
মনে রাখবি।যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
ইমরান রুমে আসে পিছু পিছু তন্নি ও আসে।
-দেখছো ভাইয়া কি হাল করলাম আপুর।
-এমনটা না করলেও পারতে।
-কেন??
-তোমার আপু তো কষ্ট পেলো তাই না।
-বাদ দাও তো ঘুমায়ও এখন আমি যাই কেমন।
-হুমম যাও।
পরেরদিন কলেজে যায় আজ ইমরানের মন খুব
ভালো কারন অনেক দিন পর একজনের সাথে দেখা
হতে যাচ্ছে তার এবং সে ছিলো তার ছোট বেলার
বন্ধু কিন্তু ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যায় তারা।
-ইমরান ।
পিছন থেকে ডাক দিলে ইমরান ফিরে তাকিয়ে
দেখে তার সেই আপনজন যার জন্য অপেক্ষা
করছিলো সে এসেছে।
-আকাশ কেমন আছিস ভাই??
-আমি তো ভালো।তুই কেমন আছিস??
-খুব ভালো।
-চল একজায়গায় বসি।
-হুমম চল।
ইমরান আর আকাশ দুজন একজায়গায় গিয়ে বসে কিন্তু
তার একটু পরই তমা এবং তার বান্ধবিরা সেখানে যায়।
-এই এখান থেকে ওঠ আমরা বসবো।
-অন্য জায়গায় গিয়ে বসো আমরা এখানে বসে
আছি।।
-তোরে না উঠতে বলছি।
-উঠবো না কি করবে।
-দেখ কি করি।
তমা ইমরানের কলার ধরে টান দিয়ে তুলে ফেলে
দেয়।আকাশ তমাকে ঠাশশশশশশ করে একটা চড়
মারে।
-এই ছেলে তোর সাহস কি করে হয় আমার গায়ে
হাত দেওয়ার।
-ঠিকি করছি আপনার মতো বুদ্ধিহীনতা মানুষকে
আরো মারা উচিত।কি ভেবেছেন আপনারা আমার
বন্ধুকে বাড়িতে জায়গা দিয়েছেন বলে ও কি
কাজের লোক নাকি?একটা কাজের লোকের
সাথেও এমন ব্যাবহার কেউ করে না যতোটা আপনারা
করছেন।ও না আপনার পরিবারের একজন তাহলে
ওকে কাজের লোকের মতো রাখছেন কেন??
-আকাশ প্লিজ চুপ কর(উঠে দাড়িয়ে)
-না ইমরান তুই চুপ কর।বাবা মাকে কখনো
হারিয়েছেন??হারিয়ে দেখেন কেমন লাগে
আমাকে সব বলে কতোটা কষ্ট নিয়ে বেচে
আছে তবুও আপনারা আরো কষ্ট দেন।আজ
থেকে ইমরান আর আপনাদের ওখানে থাকবে না
আমি আমার বন্ধুকে নিয়ে যাবো হবে তো??
-চুপপপ।
-কি হলো চুপ করে আছেন কেন??
তমা মাথা নিচু করে আছে কিছুই বলছে না আর বলবেই
কি সব সত্যি কথা যে বলছে।
আকাশ ইমরান কে নিয়ে চলে যায় আর তমা বাসায়
চলে যায়।আজ তার কেমন জেনো লাগছে।
-একিরে আপু ভাইয়া কই??
-আর আসবে না??
-মানে??
-তোর ভাইয়া আর আসবে না চলে গেছে
আরেক জায়গায়।
-তার মানে তুই কিছু বলেছিস আমি আব্বুকে বলছি।
(হালকা কান্না ভাব)
তমা তন্নিকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেদে ওঠে।
-বলনা আমি কি এতোটাই খারাপ??আমার মাঝে কি দয়া মায়া
কিছু নেই?
-আছে তো।
-তাহলে কেন আমি এমনটা করলাম বলতো কিভাবে
ওকে কষ্ট দিতে পারলাম বলতো আমায় এস শাস্তি
পাওয়া উচিত।
-না তুমি চিন্তা করো না ঘুমিয়ে পড়ো আপু।
-আব্বু কোথায়??
-চলে গিয়েছে।
-আম্মু??
-শুয়ে আছে।
-ঠিক আছে যা আমি একটু ঘুমাবো।
তমা শুয়ে পড়ে কোলবালিশকে জড়িয়ে নিয়ে
কাদতে থাকে কিন্তু কোন আওয়াজ না করে আজ
তার মনে হচ্ছে বড্ড বেশি অহংকার ছিলো তার
মাঝে।কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়ে।কয়েকদিন তমা
কলেজে যায় কিন্তু এখন আর িমরানকে কলেজে
দেখে না একবার দেখা পাওয়ার আশায় কলেজে
ছুটে যায় কিন্তু পায় না।
-দোস্ত মন খারাপ করে আছিস কেন??
-নারে।
-ইমরান ঠিক আসবে দেখিস??
-কবে??
-একদিন আসবেই।
-আমি আর পারছিনা।
-দাত থাকতে দাতের মর্জাদা কেউ বোঝেনা রে
তুই ও বুঝিস নাই এখন বুঝতে পারছিস।
-হুমম।
ওরা কতোক্ষন কথা বলে বাসায় চলে যায়।বিকেলে
তমা ছাদে গিয়ে আনমনে দাড়িয়ে থাকে বাতাসে চুল
গুলো উড়তে থাকে।
-এই ইমরান আয়না প্লিজ ফিরে আমার ভুল হয়ে
গিয়েছে আর হবেনা মাফ করে প্লিজ চলে আয়।
কথাগুলো বলা শেষে কয়েক ফোটা জ্বল
চোখ বেয়ে মাটিতে পড়ে।তমা একটা অন্যদিকে
তাকিয়ে দেখে একটা ফুলগাছ।তখন মনে পড়ে এই
ফুলগাছের জন্য কি মারামারি করেছিলো ইমরান লাগাবে
আর তমা লাগাতে দিবে না।ফুলগাছটা অবশেষে মরে
যাওয়ার মতো হয়ে গিয়েছে।তমা তাড়াতাড়ি নিচে যায়
কিছু নিয়ে আবার উপরে এসে ফুলগাছটায় দেয় সুন্দর
করে গাছটাকে ঠিক করে।
-কিরে আপু আজ এই গাছটার প্রতি নজর দিয়েছিস কি
ব্যাপার।
- না কিছুনা।
এরপর পরেরদিন তমা কলেজে গিয়ে দেখে
ইমরান একটা মেয়ের সাথে বসে কথা বলছে।
-ইমরান এ কে??(রাগি চোখে)
-এই তুমি যাও হা তোমার সাথে পরা কথা বলছি এই রাগি
ম্যামটার সাথে বলে নিই আগে।
-ঠিক আছে বায়।(মোয়েটি)
-ওই কুত্তা বল মেয়েটি কে??(শার্টের কলার ধরে)
-যেই হক আপনার কি??(শার্টের কলার ছাড়িয়ে নিয়ে)
-আমার কি মানে তোকে একটা প্রশ্ন করছি উত্তর
দে।আর তুই আমার ওখানে চল।
-দেখুন আগে আপনার চাকর ছিলাম এখন আর না যে
আপনার প্রশ্নের উত্তর দিবো আর আপনার কথা
শুনবো।-আমার মুখের উপর কথা চল বলছি।(হাত ধরে
টেনে নিয়)
-না আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না।(হাত জোড়
করে ছাড়িয়ে নিয়ে)
-ঠিক বলেছিস ইমরান
-কিরে আকাশ তুই এখানে??
-হুমম তোকে নিতে এলাম।
-আকাশ ইমরান কোথাও যাবে না।
-যাবে যাবে চল ইমরান ।
ইমরান কে টেনে নিয়ে যায় আকাশ শেষ বারের
মতো ইমরান পিছনে ফিরে দেখে তমার চোখ
থেকে পানি বেয়ে মাটিতে পড়ছে।এরপর আর পিছু
ফিরে তাকায়নি ইমরান ।
দুপুরে,
-দোস্ত তুই কাদছিস কেন??
তমা তিশাকে ধরে হাউমাউ করে কেদে দেয়।তিশা
শান্তনা দিতে থাকে।
-কি করবো বল ভেতরটা আমার জ্বলে পুড়ে শেষ
হয়ে যাচ্ছে তিশা আমি আর এই ইগনোর নিতে পারছি
না।বিশ্বাস কর যদি তোকে দেখাতে পারতাম তাহলে
বুঝতে কতোটা কষ্টে শেষ হচ্ছি আমি।
-ধৈর্য ধর তাহলে দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
-আর কতো বল ও কি একটুও বুঝে না এখন আমি
এতোটা চেন্জ কেনো হইছি।
-হুমম বুঝবে চল বাসায় চল।
-হুমম।
কয়েকদিন পর তমা বিকেলে লেকের পাশে
হাটতে বের হয় বাসায় থেকে দুদিন দম বন্ধ হয়ে
যাচ্ছিলো।হাটছে লেকের সন্দুর বাতাস বয়ে
যাচ্ছে হঠাৎ তমা তাকিয়ে দেখে িিমরান সেইদিনের
ওই মেয়ের সাথে বসে কথা বলছে হেসে
হেসে।তমার মন ভেঙ্গে যায় আর একমিনিট ও
দেরী করে না সেখানে বাড়িতে গিয়ে দরজা
আটকিয়ে মুখে হাত চেপে রেখে কান্না করতে
থাকে।তমার মন চায় চিৎকার করে কাদতে কিন্তু
পারেনা।
-কিরে মা দরজা খোল এসে দরজা হুট করে লাগিয়ে
দিয়েছিস কি হয়েছে।দরজা খোল।
তমা দরজা খুলে দেয় তমার আম্মু তাকিয়ে দেখে
তমার চোখ লাল হয়ে আছে বুঝতে পারে কান্না
করেছে খুব।
-কি হয়েছে মা আমায় বল?
-ইমরান ।
-ওই ভিখারি কিছু করেছে তোর বল ওর দেখ কি করি।
-আমি ইমরানকে ভালোবাসি আম্মু তুমি ওকে এনে
দাও।
-কি তুই ওকে ভালোবাসিস ও তো কাজের লোক।
-আম্মু তুমি না আমার সব আবদার রাখো।
-ঠিক আছে কিন্তু কই ও??
-রাগ করে চলে গিয়েছে।তুমি ওকে এনে দাওনা
আম্মু।
-ঠিক আছে তোর আব্বু কাল আসবে বলছি তাকে।
-উমমম্মাহ আমার সুইট আম্মু।
-যা শয়তান।
তমা রুমে যায় আর অপেক্ষা করতে থাকে দিনটা
কিভাবে কাটবে।
অবশেষে পরেরদিন তমার আব্বু আসে রাতে এবং
তমা সব বলে।তমার আব্বু মিটিমিটি হাসে এবং বলে
সমস্যা নেই।এরপরেরদিন ছাদে আনমনে দাড়িয়ে
আছে তমা হঠাৎ গেইট এর দিকে তাকিয়ে দেখে
তার আব্বু এবং ইমরান মনের অজান্তে তমার মন ভালো
হয়ে যায় অনেক খুশি হয় সে। দৌড়ে নিজের রুমে
চলে যায়।আর অপেক্ষা করে কখন ইমরান তার রুমে
আসবে।
হঠাৎ কারো কাশির আওয়াজ শুনে তমার বুকের হার্টবিট
বেড়ে যায় দরজার আড়ালো বসে থাকায় বুঝতে
পারছিলো না কে কিন্তু তমার মনে হচ্ছে ইমরান
এসেছে।তমা চুপ করে বসে আছে কখন ইমরান
এসে কথা বলবে।হঠাৎ তমাকে জড়িয়ে ধরায় তমা
কেপে ওঠে চোখ বুজে থাকে হাতের উপর
হাত দিয়ে দেখে হাত নরম।তখন চোখ খুলে
দেখে তন্নির হাত।তননিকে দেখে তমারর প্রচুর রাগ
উঠে যায়।তমার রাগ দেখে তননি ভয়েতে দৌড় দেয়
রুম থেকে।
রাতের বেলা তমা ছাদে যায় একটু রাত উপভোগ
করতে কিন্তু উঠতেই দেখতে পায় তননি আর ইমরান
হেসে হেসে কথা বলছে বুকের বাম পাশে ব্যাথা
অনুভব করে নিজের রুমে গিয়ো বালিশে মুখ
গুজে হালকা শব্দ করে কেদে দেয়।কাদতে
কাদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।
পরেরদিন কলেজে একটু দেরীতে যায় গিয়ে
দেখে আবার ওই মেয়ের সাথে বসে আছে
এবারো রাগ উঠে যায় এবং গিয়ে ওদের সামনে দাড়ায়
ইমরান মেয়েটাকে যেতে বলে মেয়েটা চলে
যায়।
-ওর নাম কি??
-জান্নাত।আমার ভালোবাসা,