পিচ্চি মামাতো বোন যখন রোমান্টিক বউ শেষ পর্ব
পরেরদিন তমা কলেজে একটু দেরীতে যায়
গিয়ে দেখে ইমরান আর ওই মেয়েটা বসে
আছে।ইমরান দেখতে পায় তমা আসছে তাদের
দিকে তাই সে মেয়েটাকে চলে যেতে বলে।
-কে ছিলো ওটা??
-জান্নাত। আমার ভালোবাসা।
-মানে?
-ওর নাম জান্নাত যাকে আমি ভালোবাসি।
-কবে থেকে??
-কয়েকদিন আগে থেকেই।
-না এটা মিথ্যা।
-মিথ্যা নাকি সত্য বিশ্বাস করলে করুন না করলে নেই।
-না তুই শুধু আমার আর কারো না।
-সরি বায় ভালো থাকবেন।
ইমরান চলে যায় তমা বসে কাদতে থাকে।আর
থাকতে না পেরে বাসায় চলে যায়।গিয়ে আজো
রুম আটকে দেয় তার পুরো পৃথিবীটা আলদা হয়ে
যাচ্ছিলো এমন মনে হচ্ছে।সারাদিন শুয়েই থাকে
কোথাও যায় না।পরেরদিন সকালে উঠে একটু নিচে
যায় দেখে িিমরানের রুমের দরজা খোলা।চুপিচুপি
ইমরানের রুমে ঢুকে।ইমরানকে দেখতে পায় পিচ্চি
ছেলের মতো শুয়ে আছে একদম মায়ায় ভরা
চেহারায় তমার ইচ্ছা হয় একবার ওর সামনে বলতে ওর
ভালোবাসার দায়িত্বটা ওকে দিতে কিন্তু পরোক্ষনে
জান্নাতের কথা মনে পড়তেই চোখের কোনা
চিকচিক করে উঠে এবং কয়েকফোটা জ্বল মাটিতে
গড়িয়ে পড়ে তমা ইমরানের মাথার কাছে বসে
আছে ইচ্ছা হয় ইমরানের সুন্দর চুলগুলো একটু
নাড়তে কিন্তু তা করেনা এই ভেবে যদি ইমরান
জেগে যায়।তমা ইমরানের কপালে আলতো করে
একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয় যাতে ইমরান
বুঝতে না পারে। এরপর তমা নিজের রুমে চলে যায়।
দুদিন পর কলেজে যায় তমা ।
-সবাই শোনো।(স্যার)
-জ্বি স্যার বলুন।
-সবাই কাল কক্সবাজার যাচ্ছি। সবাই গিয়ে তৈরি হয়ে নাও।
স্যার চলে যায়।
-কিরে তুই মনমরা ভাবে বসে আছিস কেন??(তিশা)
-এমনি।
-কাল সবাই কতো মজা করবো আর আজ তুই এখন মন
খারাপ।কি হয়েছে??
-কিছু না থাকরে আমার যেতে মন চাচ্ছে না।
-আচ্ছা বাসায় গিয়ে ডিসিশন নে যা।
তমা বাসায় চলে যায়।বসে আছে হঠাৎ দেখে ইমরান
তার রুমে।
-আসবো??
-হুমম আসো।
-তুমি নাকি যাচ্ছো না।
-হুমম।
-প্লিজ চলো প্লিজ হাত জোড় করছি।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
পরেরদিন তৈরি হয় তমা ইমরানের জন্য খুব সুন্দর করে
সাজে চুলগুলো বেধে চুলে বেলী ফুলের
মালা দেয় তমা প্রিয় তমা জানে এটা ইমরানের ও প্রিয়।
চোখে গাড় করে কাজল দেয়।নীল শাড়ি পড়ে
হাতে চুড়ি ঠোঠে হালকা গোলাপি লিপস্টিক দেয় সব
মিলিয়ে একদম নীল পরীর মতো সাজে।
কলেজে যায় মুখে একটা হাসি কিন্তু হাসিটা বেশিক্ষণ
থাকেনা।কেননা কলেজে গিয়ে দেখে ইমরান ওই
মেয়ে এবং সাথে ইমরান এর বন্ধু।তমার মন খারাপ হয়ে
যায় ইচ্ছা করে চিৎকার করে কাদতে কিন্তু তা না করে
চাপা কান্না করে চোখ দিয়ে কয়েকফোটা জ্বল
পড়ে শুধু।
-কিরে তোকে না একদম ফাটাফাটি লাগছে আর কিরে
কাদছিস কেন??(তিশা)
-চুপপ।
-চুপ করে আছিস কেন??
-সামনে তাকা।
তিশা সামনে তাকিয়ে বুঝতে পারি সব সে তমাকে
শান্তনা করে যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
এরপর গাড়ি চলে আসে এবং সবাই কক্সবাজার এর
উদ্দেশ্য উঠে পড়ে।সেখানে যাওয়ার পর একদিন
পর সবাই বের হয় তমার আরো রাগ হয় ওদের
ঘুরতে দেখে।তাই সে একটা কাজ করে।
-ইমরান সমস্যা হয়ে গিয়েছে।
-কি??
-তমাসমুদ্রপ ডুবে গিয়েছে।
-কি বলিস ও তো সাতার জানে না।(কান্না করে)
-হুমমমম চলল।
ইমরান এবং আকাশ দুজনে চলে যায় সমুদ্রের ধারে
কিন্তু ততোক্ষণে দেরী হয়ে যায় আর পাওয়া যায়
না তমাকে ইমরান মাটিতে বসে আকাশের দিকে
তাকিয়ে চিৎকার দেয় আকাশ শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা
করছে তিশাও কান্না করছে কিন্তু আর হয়তো এই
কান্না যার জন্য করা সে ফিরে আসবে না।তমার মা বাবা
কে জানানো হয়নি এখনো িিমরান জানাতে বারন করে
কেননা ইমরান ভয়ে আছে ওরা শুনলে ওদের কি
হবে।হঠাৎ খবর পায় লাইফগার্ড তমাকে খুজে
পেয়েছে তখন ইমরান একটু খুশি হয় কিন্তু এখনো
সম্পূর্ণ ভাবে সে বিপদের আশা বাদ দেয়নি।তমাকে
ডক্টর এর কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ডক্টর তখন সুখবর
দেয় যে তমা বেচে আছে।ইমরান আর বাকি সবাই
দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সবাই বের হয়ে এলে ইমরান
ভিতরে যায়।ইমরান ভিতরে গিয়ে দেখে চুপ করে
শুয়ে ঘুমাচ্ছে।ইমরান তমার মাথার কাছে গিয়ে বসে।
-এই তমা তুমি এমন কেন??(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
-আজ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো আমি কাকে
নিয়ে বাচতাম।আমায় ক্ষমা করো প্লিজ তোমার সাথে
ভুল করেছি আসলে আমি চেয়েছিলাম তোমার সব
অহংকার ভাঙতে তাই এইসব করি।প্লিজ তমা আমায় মাফ
করো সব সাজানো ছিলো।জান্নাত হলো
আকাশের গার্লফ্রেন্ড।সব আমার কথায় জানো
আমিও তোমার কান্না দেখে নিজের কান্না করতাম
কিন্তু অপেক্ষায় ছিলাম তোমার অহংকার ভাঙবে কিন্তু
বুঝতে পারিনি আজ এমন হবে আমি আর কখনো
এমন করবো না শেষবারের মতো মাফ করে দিও।
এতোক্ষণ ধরে তমা চোখ বুঝে সব শুনছিলো
আর কথা শেষ হবার পরই চোখ খোলে।
-কে আপনি??
-আমি কে??(অবাক হয়ে)
-হুমম কে আপনি??
-দেখো তমা আমি বললাম তো মাফ করে দাও।
-দেখেন আপনি আমার সাথে তুমি করে কথা কেন
বলছেন আর আমি এখানে আসলাম কিভাবে??আমি
তো বাড়িতে ছিলাম।
ইমরান তখন ডক্টরকে ডেকে আনে ডক্টর
দেখে বলে এর অর্ধেক স্মৃতি মনে আছে আর
বাকিটুকু ভুলে গিয়েছে।কথাটা শুনে ইমরান এর মাথায়
আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।ডক্টর আরো বলে যে
যদি কখনো স্মৃতি নিজে থেকেই ফিরে আসে
তাহলে হবে আর কখনো জোড় করবেন না
এতে বিপরীত হয়ে যাবে।এর মধ্যে তমা অলরেডি
উঠে চলে যায় কিন্তু ইমরান রা দেখতে পায় না।ডক্টর
এর সাথে কথা বলে গিয়ে দেখে তমা নেই ইমরান
আরো বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে।ইমরান ওর বন্ধু তিশার
কাছে যায় গিয়ে দেখে তিশাও নেই।ফোন বের
করে ইমরান তিশার কাছে ফোন দেয়।
-হ্যালো তিশা??
-হুমম।
-তুমি কোথায়??
-গাড়িতে??
-কেন??
-তমাকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।
-তোমায় চিনেছে??
-হা।
-যাক একটু বাচলাম(দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
-কেন??
-না কিছুনা আমি কালই ফিরবো এখন রাখলাম।
-আচ্ছা।
পরের দিন ইমরান বাসায় ফিরে আসে।
-ইমরান এসেছিস??(মামি)
-হা মামি।
-তমা চলে এলো কেন??
-ও থাকতে চাইলো না তাই আমায় বললো চলে যাচ্ছি।
আচ্ছা মামি আমার খুব টায়ার্ড লাগছে আমি গেলাম
কেমন??
-হুমম যা রেস্ট নে।
ইমরান রুমে যায় ইমরান সময় অনুযায়ী একটু তাড়াতাড়িই
চলে এসেছে নিজের রুমে মাত্র গা এলিয়ে দিয়ে
শুয়েছে ঠিক তক্ষুনি তমা বাথরুম থেকে গোসল
করে আয়নার সামনে গিয়ে টাওয়াল খুলে আয়নায়
তাকিয়ে জামা নাওয়ার জন্য বিছানার দিকে তাকিয়ে
দেখে আর ঠিক তক্ষুনি ইমরান ও চোখ খুলে তাকায়
তমা চিৎকার করে ওঠে সাথে ইমরানও।ইমরান তাড়াতাড়ি
চোখ বন্ধ করে বের হয়ে যায় আর তমা এই
সময়ে তাড়াতাড়ি করে কাপর পড়ে নেয়।এর মধ্যে
তমার আম্মু চলে আসে।
-কিরে কি হয়েছে??
-কিছুনা আম্মু(তমা)
-তাহলে চিল্লালি কেন??
-তেলাপোকা দেখে।[মেয়েরা তেলাপোকা
দেখে ভয় পায় কেন আল্লাহই জানে মনে হয়
ওদের বুঝি খেতে আসছে]
-পারিস ও বটে আমি গেলাম।
মামি চলে যায়।
-আপনি আমার পিছু পিছু আমার বাড়ি চলে এসেছেন??
আপনার সাহস কি করে হয়??
-তমা প্লিজ তুৃমি সব ভুলে গিয়েছো আর তোমার
আম্মু আমার মামি।
-ভালো আপনি যান তো আমার সব শেষ করে
দিছেরে ইচ্ছা করছে মেরে ফেলি।
তমা চলে যায় আর ইমরান মাথা উচু করে উপর আলার
কাছে বলে আমি নিরুপায় যদি জোড় করি তাহলে
হয়তো হারিয়ে ফেলবো তোমায়।ইমরান চুপচাপ
রুমে যায় গিয়ে একটা ঘুম দেয়।কিছু দিন পর পড়ন্ত
বিকেলে সূর্য যখন ডুবে গিয়ে আকাশে লাল আভা
পড়েছে হালকা বাতাস বয়ে চলছে তখন ইমরান ছাদে
রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে থাকে।
-ভাইয়া কেমন আছো??
-এইতো ভালো তুই কেমন আছিস??
-হুমম ভালো।ভাইয়া তোমায় কিছু বলবো।
-হুমম বল।
-আমি না একজনকে ভালোবাসি।
-বাহহ পিচ্চি বলে কি কিন্তু শোন এই বয়সে
ভালোবাসা উচিত না তুই ভালো করে পড়াশোনা কর।
-তুমি সত্যি বলছো??
-হুমম।
-ঠিক আছে।
দুজন হাসাহাসি করে কথা বলছিলো হঠাৎ কোথা
থেকে যেনো তমা এসে ইমরানকে মারতে
লাগে।
-কুত্তা আমার বোনের সাথে কিসের এতো
হেসে কথা তোর কি গার্লফ্রেন্ড লাগে।
তমার এমন ব্যাবহার দেখে ইমরান অবাক হয়ে যায়।
-তোমার সব মনে পড়ে গেছে??
-কিছু ভুলিনি তাহলে মনে পড়বে কি??
-তুমি যেমন নাটক করেছিলে আমিও করছি সব ভুলে
যাওয়ার সেইদিন আমি ঘুমানোর নাটক করে সব শুনে
ফেলি।
-শয়তান দেখছি এমন শয়তান দেখি নাই।
-চুপপ এখন।
তাই বলে তমা ইমরান কে জড়িয়ে ধরে ঠোঠের
সাথে ঠোঠ মিলিয়ে দেয় যার জন্য ইমরান
মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
-এই যে আমি আছি এখানে।
তখন তমা বুঝতে পারে তার বোন ছিলো ছেড়ে
দিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে দৌড় দেয় ইমরানও কিছু না
বলে লজ্জা পেয়ে চলে যায়।এরপর দুজন
পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করে আজ ইমরান বাসর
ঘরের সামনে দাড়িয়ে ভয়ে তার পা কাপছে এই
বিয়েতে কতো মানুষ সিংগেল থেকে ডাবল হয়ে
যায় সেও হবে।কে যেনো ধাক্কা দিয়ে ভিতরে
দিয়ে পাঠায় ইমরান ভিতরে গিয়ে বসে তমা বলে অযু
করে আসতে।ইমরান অযু করে আসে দুজনে
নফল নামাজ পড়ে নেয়।ইমরান উঠে বিছিনায় বসে তমা
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ইমরানের বুকের উপর
উঠে বসে ইমরানের ঠোঠের সাথে ঠোঠ
মিলিয়ে দেয়।
ইমরান একটু পর ছাড়িয়ে নেয়।
-মেরে ফেলবা নাকি আর এসব কি হা দেখছো না
কতো পাঠক পড়ছে।
-সরি এই আপনারা এখন যান তো এখন।
এরপর বাকিটা ইতিহাস,,,,
সবাই ভালো থাকবোন আল্লাহ হাফেজ।।
সমাপ্ত