সিনিয়র মেয়ে যখন আদুরে বউ পর্ব ৪
আমি বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছি, দিয়া আসতেই দিয়াকে নিয়ে রওনা হলাম দিয়ার আব্বুর বাসার দিকে।
দিয়াদের বাসাতে এসে পৌছালাম অবশেষে। আমি এখন একটা রুমে বসে আছি আর দিয়া ওর আম্মুর কাছে।
দুপুরে লাঞ্চের পরে আমি আর দিয়া রুমের মধ্যে বসে আছি।
দিয়া আমার দিকে তাকিয়ে....
-- কোনো প্রব্লেম হচ্ছে না তো তোমার। (দিয়া)
-- না কোনো প্রব্লেম হচ্ছে না।
-- ওকে।
এটা বলেই দিয়া স্টপ হয়ে গেলো।
আমি দিয়ার সাথে আরো কথা বলবো ভেবেছিলাম বাট ও নিজে থেকে যখন স্টপ হয়ে গেছে সো কথা বলা না বেটারই।
দিয়া এখন খাটের ওপাশে শুয়ে আছে আর আমি এপাশে বসে আছি।
বড্ড ইচ্ছা করছে দিয়ার সাথে কথা বলতে।
এই দুদিনে বড্ড ওর সাথে মিশে ফেলেছি।
আমি কিছুক্ষন পর নিজেই.....
-- দিয়া........। (আমি)
কোনো সাড়া দিলো না....
-- দিয়া......
আবারো সাড়া দিলো না, আমি এবার দিয়ার সামনে যেতেই দেখি দিয়া লক্ষ্মী মেয়ের মতো মাথার নীচে দুটো হাত রেখে ঘুমাচ্ছে।
আমি ওর সামনে খাটে হাত রেখে বসলাম এবং ওর মাথাটাতে হাত রাখতে যাবো ঠিক তখনই আমার মন বলতে লাগলো....
-- অভ্র কি করছিস তুই? তুই তো ওকে তোর বৌ হিসাবে মানিস আর মানবিও না তাহলে কেন তুই দুর্বল হচ্ছিস এই মেয়েটার প্রতি।
সাথে সাথে আমি আমার মাথায় হাত রেখে এটাও তো ভাবা উচিত।
রাতে ডিনার সেরে আমরা দুজন রুমে আসতেই আমি দিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, দিয়া ভয় পেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে....
-- কি ব্যাপার আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? (দিয়া)
আমার ডিভোর্স চাই সেটা দিয়াকে যে আমি কিভাবে কথাটা বলবো সেটা বুঝে না উঠতে পেরে.....
-- উহহহহহ কিছু না।
এটা বলেই ওর থেকে সরে গেলাম এবং পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে আমি ঠোঁটে দিতে যাবো ঠিক তখনই দিয়া দৌড়ে এসে আমার হাত থেকে ঈগলের মতো ছোঁ মেরে সিগারেটটা কাড়িয়ে নিলো। আমি ওর এমন রিয়েক্ট দেখে.....
-- হচ্ছেটা কি? (আমি)
-- কি হচ্ছে মানে তুমি স্মোকিং করছো কেন?
-- বেশ করছি তাতে তোমার কি?
-- আমার অনেক কিছু
-- কে তুমি আমার হুম
দিয়া এবার চোখ রাঙিয়ে......
-- আমি তোমার একমাত্র স্ত্রী।
-- আমি মানি না।
-- তুমি মানো আর না মানো, আমরা আইনিভাবে স্বামীস্ত্রী।
আমি এবার দিয়ার দিকে তাকিয়ে...
-- ওহহহ আচ্ছা তুমি এখন এটার ফায়দা নিচ্ছো যে তুমি আমার স্ত্রী আর আমি তোমার স্বামী।
-- জ্বি আর আমি থাকতে তোমায় স্মোকিং করতে দেবো না।
দিয়া এটা বলেই সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করতে লাগলো আর আমিও রেগে.....
-- আমি এ বিয়ে মানি মানি মানি না, আমি ডিভোর্স চাই কালই।
সাথে সাথে দিয়া আর কিছু না বলে আমার দিকে তাকালো মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাই মেয়েটা বাট বলতে পারছে না।
সোজা গিয়ে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়লো নীরবে।
আমিও একপাশে শুয়ে পড়লাম।
মেয়েটাকে ওভাবে বকে আমার ঘুম আসছে না, একসময়ে ঘুম এলেও আবার রাত ৩টার দিকে ঘুম ভেঙে যায়।
তারপরেই শুনতে পায় কেউ যেন আমার সাইডে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে, আমি মাথা ঘুরিয়ে দেখতেই বুঝতে পারি দিয়া কান্না করছে। নিজেকে বড্ড ছোটো মনে হচ্ছে এখন, মেয়েটা কি দোষ করেছে যে ওকে এভাবে আমি শাস্তি দিচ্ছি যাইহোক আমি এবার আজই এখানে সবটা মিটিয়ে নেবো।
এসব ভেবে একটা লম্বা শ্বাস নিলাম এবং পিছন থেকে দিয়ার কাঁধে একটা হাত রাখতেই দিয়া সাথে সাথে ওর কান্না বন্ধ করে দিলো। আমি ওর কাঁধ ধরে আমার দিকে মুখ ফিরালম।
দিয়ার চোখদুটো আমার চোখের সামনে আসতেই দেখি ওর দুটো চোখ পানীতে ভরে আছে আর ওর ঠোঁটগুলো কাঁপছে হয়তো খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।
আমি আমার নিজের কান ধরলাম আর দিয়ার দিকে তাকিয়ে....
-- সরি। (আমি)
-- কেন?
-- তোমায় কষ্ট দিয়েছি তাই
-- আমি কে যে আমায় তুমি কষ্ট দিবা।
আমি এবার হাল্কা হেসে ওর দুচোখ মুছে....
-- তুমি যে আমার একমাত্র লাল টুকটুকে বৌ।
দিয়ার চোখদুটো আরো ভিজতে লাগলো এবার, অভিমান করে...
-- আমি কারোর বৌ না, আমার তো কাল ডিভোর্স হবে
আমি এবার হাল্কা হেসে ওর ঠোঁটের মাঝে আমার একটা আঙুল রেখে ফিসফিস করে....
-- জ্বি না,কাল আমাদের ডিভোর্স না কাল আমাদের নতুন করে জীবন শুরু করবো।
দিয়া আর কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো, আমি এবার দিয়ার ক্লোজে গেলাম এবং ওর গালে হাত দিয়ে হাল্কা হেসে....
-- রিভাইভ দিলাম তোমায়, চলো খেলবো খোলো.....। (আমি)
দিয়া লজ্জায় পুরাই লাল হয়ে গেলো, আর হাসতে লাগলো মেয়েটার হাসিমুখটা বেশ ভালো লাগছে এখন আমার।
-- উহুহু ওটা তো হবে না, এতো রাতে খেললে তো শব্দ পাবে মানুষ।
আমি দিয়ার নাক টিপে....
-- না চুপিচুপি খেলবো
-- হিহিহি, আচ্ছা খুলছি
এটা বলেই দেখি দিয়া শাড়ির আঁচল সরিয়ে দিলো আমি সাথে সাথে...
-- তৌবা তৌবা কি করছো এটা
দিয়া এবার লজ্জা পেয়ে মুখ বাঁকিয়ে....
-- উহহহহহ নিজেই তো বললা....
-- আরে পাগলি আমি তো ফ্রি ফায়ার খেলার কথা বলছিলাম...
ভাইরে দিয়া রেগে আগুন হয়ে গেলো এবার তাই আমার উপরে চেপে......
-- এতো রাতে ফ্রি ফায়ার আমাকে ছেড়ে
-- উম তোমার সাথেও বুঝি খেলা যায়।
দিয়া আবারো লজ্জা পেয়ে...
-- জানিনা....
এটা বলেই ও আমার থেকে উঠে পাশে বসলো।
আমিও উঠে বসলাম এবং ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর গলার কাছে আমার মুখ নিয়ে গিয়ে.....
-- চলো একটা র্যাংক খেলা যাক, প্রচুর সারভাইব করতে হবে কিন্তু নয়তো মাইনাস খাওয়ার চান্স বেশি।
দিয়া এবার হাল্কা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে....
-- দেখো আবার ম্যাপে নামতে না নামতে যেন মারা না যাও তাহলেই মাইনাস খেতে হবে
-- আরে না না আমি এখন পিরো হয়ে গেছি
-- তাই নাকি, গান চালাতে শিখেছো তো ভালো করে।
-- একদম, না পারলে তুমি তো আছো? আর হ্যাঁ আজ হেলমেট ভেস্ট ছাড়াই খেলবো।
দিয়া সাথে সাথে.....
-- না না এটা কিভাবে হয়, যদি খুব বেশি ড্যামেজ লাগে তখন...
-- আরে লাগবে না।
এবার আমি দিয়ার গলায় একটা কিস করতেই দিয়া আমার চুলগুলো চেপে ধরলো, আমি এবার দুষ্টামি করে ওর কানে একটা কামড় দিতেই....
-- উফফ লাগছে তো, ম্যাচে নামো না।
আমি হাল্কা হেসে....
-- আরে বাবা লবিতে একটু ইমোট দেখায় না। তারপর না হয় ম্যাচে যাবো.....
হটাৎ দিয়া আমায় আটকে.....
-- ওই আমি ঘুমাবো.....
-- ঘুমাবো মানে....
-- জানিনা, আমি আজ কমফরটেবল না এসবের জন্য।
-- মানে কি? ম্যাচ কি হবে?
-- জানি না, আমি এখন ঘুমাবো হিহিহি।
এটা বলেই ও শুয়ে পড়লো।
শালা আমি এখন কি করবো আমার যে খুব ইচ্ছা করে ম্যাচ খেলার, শালা এভাবে কিভাবে হয় কতো আশা ছিলো সব আশা নিরাশা করে দিলো।
যাইহোক নিজেকে শান্ত করে ঘুমিয়ে পড়লাম.....