প্রিন্সিপাল ম্যাডাম যখন বউ পর্ব ২ - নিবর অনুভূতি

মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

প্রিন্সিপাল ম্যাডাম যখন বউ পর্ব ২




রাতে ম্যামের সাথে ম্যাসেজিং,  আর দিনে কলেজে ম্যাডামকে দেখা, এভাবেই একমাস পর কেটে গেলো। এর মাঝে আমি একবার ম্যামকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- কাউকে ভালো লাগে কিনা! তিনি বললেন- এখনো লাগেনি কাউকে। এরপর থেকে ম্যামকে কেয়ার করা আমি আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। দিনে কলেজে আসলে ম্যাময় আর রাতে তিনি আমার কাছে ভালোবাসার মানুষ সুমাইয়া ছাড়া কিছুই না। দুই রূপে দিনকাল ভালোই চলছিলো। বুঝলাম সুমাইয়াও আমার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে। এক পর্যায়ে আমাদের মাঝে নাম্বার আদান প্রদান হয়। এবং রাত জেগে কথা হয়, একদিন তো কথা বলতে বলতে সকালই হয়ে গেছিলো। কিন্তু তখনো আমরা কেউ কাউকে ভালোবাসার কথা জানাইনি।


এরই মাঝে এক রাতে হঠাৎ আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে আমার সকল ভালোবাসার কথা সুমাইয়াকে জানিয়ে দিলাম, আর সুমাইয়াও রাজি হয়ে গেলো। এরপর থেকে আমাদের প্রেম ভালোই চলছিলো, রাত জেগে কথাবলা, রাগ, অভিমান খুনসুটি, কেয়ার কোনোকিছুর কমতি ছিলো না। কিন্তু সমস্যা হলো এরই মাঝে এইচএসসি পরীক্ষার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কলেজের টপার তাই সকলের অনেক প্রত্যাশা আমার নিকট। একদিন তো স্বয়ং ম্যাম ডেকে উনার রুমে নিয়ে গেলেন, আর বললেন, তোমার কাছে একটা রেকর্ড গড়া রেজাল্ট চাই। নিজের ভালোবাসার মানুষের এমন আবদার না পূরণ করে পারি? যদিওবা ম্যাম জানেন না আমিই তার ভালোবাসার মানুষ। কিন্তু আমি তো জানি ম্যাম যে আমার। তাই ভালো রেজাল্ট করার লক্ষ্যে সুমাইয়া ম্যামের সাথে কথা কমিয়ে দিয়ে ধুমিয়ে পড়ালেখা করতাম। কিন্তু সুমাইয়া ম্যাম প্রায় আমাকে কল দিয়ে কান্নাকাটি করতো, বলতো- আমি উনাকে আগের মতো সময় দি না, ভালোবাসি না, চেইঞ্জ হয়ে গেছি। কিন্তু আমি তো মুখ ফেটে বলতে পারতেছি না আমার যে পরীক্ষা আর আপনার চাওয়া পূরণ করতে হবে। এভাবেই চলতে চলতে আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো। এরপর সুমাইয়া ম্যামের সাথে আমার রাত জেগে কথা বলা আবার আগের মতো শুরু হয়ে গেলো।


একদিন হঠাৎ ম্যাম বললো, আমাদের রিলেশনের আজ ৩ মাস, অথচ তোমার আমার মিট হয়নি, চলো কাল দেখা করি।

ম্যামের এমন কথা শুনে আমার মাথায় আকাচ ভেঙে পরলো, কারণ ম্যাম তো আমাকে ছাত্র হিসেবে চিনে, আর ভালোবাসে আমার ফেইক পরিচয়, ছবিকে। এখন আমি ম্যামের সামনে কিভাবে যাবো! অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম, যা হওয়ার হবে, ম্যাম সব সত্যিই জানাবো। তাই আমি আর ম্যাম ঠিক করলাম আমরা কালই দেখা করবো। আমি সুমাইয়া ম্যামকে বললাম যাতে তিনি নীল শাড়ি আর কালো ব্লাউজ, সাথে চুল খোলা রেখে আসেন, কারণ ম্যামলে এভাবে দেখেই আমার প্রেমে পড়ছিলো। আর ম্যামও আমাকে বললো আমি যাতে নীল পাঞ্জাবী পরে যাই।


ম্যামের জন্য রেস্টুরেন্টে বসে অপেক্ষা করছি। মনে অনেক চিন্তা আর ম্যামকে হারানো ভয় করছে। হঠাৎ দেখি ম্যাম আমার সামনে, আমাকে বলতে লাগলো-

ম্যামঃ আরে আজহার, তুমি এখানে কি করছো?

আমিঃ আসলে ম্যাম

ম্যামঃ কি আসলে? কারো জন্য অপেক্ষা করছো নাকি তোমার ফ্রেন্ডদের কোনো ট্রিটমিট আছে?

আমিঃ বসেন, বলছি সব

ম্যামঃ আমার একটু তাড়া আছে, একজনের সাথে মিট করবো।

আমিঃ আরে বসেন ২মিনিট, সব বলছি।

ম্যাম তখন বসলো, আর আমি ম্যামের দিকে তাকিয়ে আরেকটু ক্রাশ খেয়ে নিলাম, হয়তো শেষবারের মতো। 

এরপর নিচের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম-

আমিঃ ম্যাম, আপনি যার সাথে দেখা করতে আসছেন আমি সে।

ম্যামঃ আর ইউ জোকিং? মজা করবা না কিন্তু।  আমি তোমার প্রিন্সিপাল ম্যাম, ফ্রেন্ড না।

আমিঃ মজা না, আসলে বিজয় দিবসের সেই প্রোগ্রামে আপনাকে আমার ভালো লেগেছিলো, এরপর ফেসবুকে ফেইক পরিচয় দিয়ে আপনার সাথে রিলেশনে জড়িয়েছি, কারণ আপনি আমার রিয়েল পরিচয় জানলে আমাকে ভালোবাসতে না তাই।

এসব বলতে বলতে হঠাৎ ঠাস ঠাস শব্দে দুইটা থাপ্পড় নিজের গালে অনুভব করলাম, বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা ম্যামের কাজ।

 ম্যাম হাঁপাতে হাঁপাতে বলতো লাগলো-

- ইউ বাস্টার্ড, গু টু হেল

বলেই কাঁদতে কাঁদতে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে গেলো।

বাসায় এসে প্যান্টের পকেট থেকে রিং আর পায়েল বের করতেই কেঁদে ফেললাম, হয়তো এগুলা ম্যাডামে আঙুলে, পায়ে কখনো পরিয়ে দিতে পারবো না।

ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়লাম, খেতে ভালো লাগছে না। ফেসবুকে ডুকতেই দেখি ম্যাম আমাকে ব্লক দিয়ে রেখেছে। তখন আমি ম্যামের নাম্বারে একটা ম্যাসেজ লিখলাম-

:- আপনি হয়তো ভাবছেন, আমি ছাত্র হয়ে কিভাবে প্রেম করতে পারি? আসলে ভালোবাসা বয়স বুঝে না। এখন হয়তো সমাজের কথা ভাববেন, আপনি আমার থেকে ৭ বছরের বড় সমাজ কি ভাব্বে? সংসারটা তো সমাজ করবে না, সংসার করবে দুজন মানুষ, তাদের মন ভালোবাসা যদি ঠিক থাকে তাহলে সমাজ কি? তারা সুখে থাকলে সমাজ কি না কি বলবে দেখার কি দরকার। আমি আপনাকে ভালেবাসি, সত্যিই ভালোবাসি। প্লিজ ভেবে দেখবেন।

ম্যাসেজ লিখে ম্যাডামকে সেন্ড করলাম, কিন্তু কোনো রিপ্লাই নাই। সাতদিন কেঁটে গেলো। এই সাতদিন আমি যে কত চোখের জল ফেলছি তা বালিশ ছাড়া আর কেউ জানে না।


হঠাৎ রাত এগারটায় দেখলাম ম্যামের নাম্বার থেকে কল! ধরবো কি না ধরবো না ভাবতেই ভাবতেই কেঁটে গেলো। আবার কল দিলো। ভাবতেছি হয়তো ম্যাম গালি দিবে। তাও ধরলাম।

ধরার পর অপরপ্রান্ত থেকে শুধু ম্যামের ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, কিছু বলছে না। তখন নিরবতা ভেঙে আমি বললাম -ফ্রেশ হয়ে আসেন। তবুও ম্যামের কান্না শুনতে পেয়ে আস্তে করে বললাম- আই লাভ ইউ।

ম্যাম তখন কাঁদতে কাঁদতেই বলতে লাগলো- আই লাভ ইউ টু, জানো এই সাতদিন একটা রাতও ঘুমাতে পারি না, তোমার সাথে রাত জেগে কথা বলা, কেয়ারিং, রাগ করা সব মনে পড়ে, এসব আমায় ভালো থাকতে দিচ্ছে না। আমি তোমায় ভালোবাসি। নিজের করে নিতে চাই।

সেই রাতে আমাদের অনেক কথা হলো। পরদিন আবার আগের রেস্টুরেন্টেই মিট করার সিদ্ধান্ত নিলাম।


রেস্টুরেন্টে ডুকতেই দেখি ম্যাম বসে আছে। আমি ডুকতেই আমার জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে এলোপাথাড়ি কিস করতে লাগলো। টানা ৫মিনিট পর ম্যাম ছেড়ে দিয়ে হাঁপাতে লাগলো। লজ্জায় ম্যাম নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো আর আমিও। আস্তে করে বললাম সবাই দেখলো তো। ম্যাম একটা লজ্জার চাহনি দিয়ে বললো দেখলে কি? আমি আমার বয়ফ্রেন্ডকে দিছি। এরপর আমি সেই রিংটা ম্যামের হাতে আর পায়েল পায়ে পরিয়ে দিলাম। ম্যামও আমায় একটা রিং পরিয়ে দিলো। তখন আমি বললাম,

আমিঃ শুধু রিং পরালে হবে না, আমাকে মিষ্টি খাওয়াতে হবে।

ম্যামঃ চলো রেস্টুরেন্টে

আমিঃ ঐ মিষ্টি না, আপনার ঠোঁটের মিষ্টি।

ম্যামঃ কিছুক্ষণ আগে না দিলাম।

আমিঃ এখন আবার দেন না ম্যাম, ইচ্ছে করছে।

ম্যাম এবার রেগে গেলো, বলতে লাগলো- ম্যাম তোকে কিভাবে দিবে? ম্যামকে ছাত্রকে দিতে পারে? তুই আমাকে বারবার ম্যাম আর আপনি করে বলিস কেনো? ম্যামের সাথে প্রেম করার সময় মনে ছিলো না?


আরে ঠিকই তো আমি ম্যাম বলছি কেনো? ও তো এখন আমার গালফ্রেন্ড সুমাইয়া বলে ডাকতে হবে। 

সাথে ওকে সুমাইয়া বলে আমার ঠোঁট সুমাইয়ার ঠোঁটে পুরে দিলাম। এরপর সুমাইয়াকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে নিজেও চলে আসলাম।